মাইনুল হক মেনু স্টাফ রিপোর্টার :
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে আমন ধান কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত দিন পার করছে কৃষক। গত এক সপ্তাহ আগে থেকে শুরু হয়েছে আমন ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ।
এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমন ধানের ফলনও ভালো হয়েছে। ভালো ফলন পেয়ে কৃষক অনেক খুশি। তবে ফলন ভালো হলেও নানা কারণে উৎপাদন খরচ অনেক বেশি হয়েছে বলে জানান কৃষক। মাড়াইয়ের পর ধানের ভালো দাম পাওয়া নিয়েও শঙ্কা আছে তাদের। কৃষকরা বলছেন, ধানের দাম ভালো পেলে আগামী মৌসুমে ধানের আবাদ অনেক বাড়বে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলার একটি পৌরসভাসহ ও নয়টি ইউনিয়নে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৩ হাজার ৮৯ হেক্টর জমিতে। হাইব্রিড ১৮৫০ হেক্টর, উফশী ১১ হাজার ১৪০ হেক্টর, স্থানীয় ১০৫ হেক্টর জমিতে। আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩ হাজার ৮৬ মেট্রিক টন।
গতকাল মঙ্গলবার উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে সরজমিনে দেখা যায়, আমন ধান কাটা শুরু করেছেন কৃষক ও কৃষি শ্রমিকগণ। এখন এলাকায় চলছে ধান কাটার মহোউৎসব। নতুন ধান ঘরে তুলে কৃষাণীরা নতুন ধানের চাল দিয়ে তৈরি করছে পিঠা, পায়েসসহ হরেক রকমের খাবার।
উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের ঝাকালিয়া ব্লকের কৃষক আলা উদ্দিন আল্লাদ মিয়া বলেন, আমি আমার জমিতে কয়েক জাতের ধান রোপন করেছিলাম। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায়, সময় মতো বৃষ্টিপাত হওয়ায় আমন ধানের ফলন গতবারের চেয়ে অনেক ভালো হয়েছে। আমার জমির ধান কাটা শুরু করে দিয়েছি। গতবারের চেয়ে এবার ধানের ফলন খুব ভালো হয়েছে।
কটিয়াদী পৌরসভা ব্লকের কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তা মোঃ মইনুল ইসলাম বলেন, কটিয়াদী পৌরসভায় আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১১৫০ হেক্টর জমি। লক্ষ মাত্রা ১১০০ মেট্রিক টন । পুরুদমে শুরু হয়েছে ধান কাটা। কয়েকদিনের মধ্যে কৃষকরা তাদের আমন ধান কেটে ঘরে তোলার কাজ শেষ করবে। কৃষকেরা ধান কেটে বাড়ি আনার পর কৃষাণীরা সেটা পরিষ্কার করে রোদে শুকিয়ে ঘরে তুলা নিয়েও ব্যস্ত সময় পার করছেন।
উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের জামষাইট ব্লকের কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তা নুর আলম গন্ধি বলেন, এই ব্লকে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৮০ হেক্টর, আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৮০ মেট্রিক টন। এ বছর আমন ধানের ফলন ভালো হয়েছে। ভালো ফলন পেযে কৃষকরা খুশি। আমরা সবসময় কৃষকদের পাশে থেকে পরামর্শ দিয়েছি।
উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের জালালপু ব্লকের কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তা আলতাব হোসেন বলেন, আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩০০ হেক্টর, আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৯৫ মেট্রিক টন।
ইউনিয়নের ঝাকালিয়া ব্লকের কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন বলেন, আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৬৫ হেক্টর, আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৭৫ মেট্রিক টন। এই ব্লকের কৃষকরা ধান কাটায় ব্যস্থ সময় পার করছেন। ফলনও আগের চেয়ে অনেক ভালো হয়েছে।
কটিয়াদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শফিকুল ইসলাম ভূঞা বলেন, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমনের ফলন ভাল হয়েছে। বর্তমানে চারিদিকে চলছে ধান কাটা ও ঘরে তুলার উৎসব। সবাই আমন ধান কাটা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ধানের ফলন দেখে কৃষকদের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। কটিয়াদী উপজেলায় মোট ২৮% আমন ধান কর্তন হয়েছে।