নিজস্ব প্রতিবেদক :
শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়। কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের শোলাকিয়া এলাকায় বিদ্যালয়টি অবস্থিত। ১৯৯০ সালে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। বিদ্যালয়টিতে ১৬২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রতিদিন বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীদের প্রবেশ করতে হয় নাক চেপে। কারণ বিদ্যালয়টির সামনেই রয়েছে একটি ময়লার ভাগাড়, যেখান থেকে ছড়াচ্ছে উৎকট দুর্গন্ধ। এতে মশা-মাছির উপদ্রবসহ দূষিত হচ্ছে আশপাশের পরিবেশ। ফলে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ আশপাশের বাসিন্দারা। নিজেদের এমন ভোগান্তি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
জানা গেছে, বিদ্যালয়টি শিশু কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। বিদ্যালয়টির সভাপতি কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিদ্যালয়টির সামনেই সড়ক ঘেঁষে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড় রয়েছে। দিন যত যাচ্ছে রাস্তার পাশে ভাগাড় ততই বড় হচ্ছে। নষ্ট হওয়া শাকসবজি, হোটেলের পঁচা-বাসি খাবার, মুরগির নাড়িভুঁড়ি এবং বাসাবাড়ির ময়লা-আবর্জনাসহ সব ধরনের আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। ফলে অল্প সময়ের মধ্যেই এগুলো পচে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হচ্ছে। উৎকট গন্ধের ফলে দুর্গন্ধময় ক্লাস রুমে বসে থাকতে পারছে না কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি নাক চেপে পার হচ্ছে সড়ক দিয়ে যাতায়াত করা পথচারীরাও।
বিদ্যালয়টির ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী বখতিয়ার ও পলাশ বলেন, আমরা স্কুলে যতক্ষণ থাকি ততক্ষণ আমাদের দুর্গন্ধের মধ্যে কাটাতে হয়। দুর্গন্ধের কারণে বমি করে দেই। এরকম অবস্থা অনেক দিন থেকে চলছে। এই স্কুলে ক্লাস করা অনেক কষ্টকর।
অভিভাবক মো: লিটন ও খাদেমুল ইসলাম বলেন,
দুর্গন্ধে টেকা যায় না। তারপরও জোর করে স্কুলে পাঠাই। বাচ্চারা বমি করে দেয়। এতো দুর্গন্ধ। স্কুলটির সামনে খেলার মাঠ রয়েছে সেই মাঠটিতেও খেলাধুলা করতে পারে না আমাদের বাচ্চারা। আমরা জোর আবেদন জানাচ্ছি এখানকার ভাগাড় সরিয়ে অন্য কোথাও স্থাপন করার। আমাদের বাচ্চাদের বাঁচান। এমন চলতে থাকলে বাচ্চারা বাঁচবে না।
বিদ্যালয়টির শিক্ষকরা বলছেন, পৌরসভায় বারবার অভিযোগ জানানোর পরেও এখান থেকে ময়লার ভাগাড় সরানো হয়নি। আমরা এ থেকে পরিত্রাণ চাই।
শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার চিকিৎসক মুহাম্মাদ আবিদুর রহমান ভূঞা বলেন, দুর্গন্ধের কারণে শিশুর মানসিক ও শারীরিক ঝুঁকি রয়েছে। ময়লাতে মশা মাছিসহ নানা ধরনের পোকামাকর থাকে। এই মশা থেকে ডেংগু জ্বর হবার সম্ভাবনা আছে। মাছির কারনে শিশুদের পেটের পীড়া, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন অসুখে আক্রান্ত হবার আশংকা আছে।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক ইয়াসমীন সুলতানা বলেন, দুর্গন্ধের কারণে দরজা জানালা বন্ধ করে ক্লাস নিতে হয়। তারপরও সম্ভব হয় না। এতো দুর্গন্ধ। এভাবে চলতে থাকলে বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে যাবে। এই বিষয়টির সুরাহা চাই।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কিশোরগঞ্জ জেলার প্রধান সমন্বয়ক অভি চৌধুরী বলেন, আমরা পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক 'ডিডিএলজি' এর সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবো। আশা করি খুব দ্রুতই বিষয়টির সমাধান হবে।
পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ সুলতান মিয়া বলেন, আমি এ বিষয়ে পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত 'ডিডিএলজি' এর সাথে কথা বলবো। খুব দ্রুত যেনো এই জায়গা থেকে ভাগাড় সরিয়ে অন্য কোথাও স্থাপন করা হয়।
স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক ও কিশোরগঞ্জ পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক মুকতাদিরুল আহমেদ এ বিষয়ে বলেন, আমি সবেমাত্র পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে বসছি। আমি আপনার মাধ্যমেই বিষয়টি জেনেছি। আমি সবাইকে নিয়ে বসবো। কোথায় কি সমস্যা আছে তা চিহ্নিত করে তা সমাধান করবো।
সম্পাদক ও প্রকাশক- খায়রুল ইসলাম, বার্তা সম্পাদক - সোহেল রানা
সম্পাদকীয় কার্যালয়- ৫২২ আইনুল্লাহ স্কুল রোড, স্বল্পমারিয়া, বএিশ, কিশোরগঞ্জ।
০১৯১২৫৫০৭২৭,০১৭২৪৫৭৪২১৭
Copyright © 2024 কালের নতুন সংবাদ. All rights reserved.