আতাউর রহমান বাচ্চু -
ময়মনসিংহের নান্দাইলের
রানা হত্যা আসামিদের ও নিরীহ মানুষের বাড়িঘর লুটপাট ভাঙচুর ৩৫ পরিবার বাড়ি ছাড়া।
নান্দাইল উপজেলার বনাটি গাঙ্গাইলপাড়া গ্রামের একটি হত্যা মামলার জামিনপ্রাপ্ত আসামিসহ ৩৫টি পরিবারের লোকজন বাদীপক্ষের অব্যাহত হুমকির কারণে বাড়ি যেতে পারছে না। আসামিরা বাড়ি ছাড়া থাকার সুযোগে তাদের বাড়িঘর ভাঙচুরসহ এখন জিনিসপত্র লুটপাট চলছে, চাঁদা দাবি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, ২১ এপ্রিল রাতে পূর্বশত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের হাতে খুন হন বনাটি গাঙ্গাইলপাড়া গ্রামের আবুল হাসেমের ছেলে রানা মিয়া। ঘটনার পর রানার পক্ষের লোকজন খুনের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে প্রায় ৩৫টি বাড়িঘর ভেঙে তছনছ করার পাশাপাশি গবাদিপশু পুকুরের মাছসহ জিনিসপত্র লুটে নিয়ে যায়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
খুনের পরদিন সাবেক ইউপি সদস্য মাসুদ মিয়া বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় ১৯ জনকে নামীয় এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৫-৬ জনকে আসামি করা হয়। বর্তমানে আসামিদের মধ্যে ৮ জন জামিনে রয়েছে। অন্য আসামিরা এখনো পলাতক রয়েছে। জামিনপ্রাপ্ত আসামিরা বাদীপক্ষের হুমকির কারণে বাড়িতে যেতে পাচ্ছে না।
অন্যদিকে আত্মগোপনে থাকা আসামিদের বাড়িতেও কেউ বসবাস করতে পারছে না। এ সুযোগে তাদের বসতবাড়িতে এখন লুটপাট চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগের সূত্র ধরে শুক্রবার দুপুরে সরেজমিন রাজগাতী ইউপির ওই গ্রামে ফুল মিয়া ভূঁইয়ার বাড়িতে দেখা যায়, তার ঘরের টিনের চালগুলো ঠিক থাকলেও বারান্দার চাল ভেঙে ফেলা হয়েছে। ঘরের বেড়া বা ভেতরে মালামালের কোনো অস্থিত্ব নেই।
ফুল মিয়ার স্ত্রী হালিমা খাতুন জানান, তিনিও হুমকির কারণে অন্যের বাড়িতে বসবাস করছেন। বাড়িতে লোকজন না থাকার সুযোগে এখন ঘরের নানা জিনিসপত্র খুলে নিয়ে যাচ্ছে প্রতিপক্ষের লোকজন।
তিনি আরও জানান, পাশের বাড়ির দুলাল মিয়া মামলার আসামি নন। কিন্তু তার ঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। ঘরে প্রবেশে বাধা দিতে চতুর্দিকে বরই কাটা দিয়ে রাখা হয়েছে।
দুলালের মেয়ে শিল্পী আক্তার জানান, তিনি বর্তমান ঢাকা থাকেন, তাদের ৩টি গরুসহ ৭০ মন ধান লুট করে নিয়ে গেছে।
শুধু দুলাল নয়, মামলায় অভিযুক্ত নয় এমন বেশ কয়েকজনের বাড়িও ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে।
বৃদ্ধ আছিয়া বেগম জানান, তার ছয় ছেলে আসামি নয়। তারপরও তাদের বাড়িতে হামলা হয়েছে। জমির ধান কেটে নিয়েছে।
পাশের হারুন অর রশিদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, লুটপাট ও ভাঙচুর হওয়া একটি আধা পাকা ঘরের প্রাচীর, পিলার ভেঙে বারান্দা ও দরজা-জানালার গ্রিল খুলে নিয়ে গেছে। ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে পাশের সোলেমান ভূঁইয়ার বাড়ির বেশ কয়েকটি ঘরও। খুলে নিয়ে গেছে পানির পাম্প ও পাইপ।
আসামি শাহিন আলমের মা বেদেনা আক্তার জানান, ভয়ে বাড়িতে কোনো পুরুষ লোক থাকতে পারছে না। তারপর রাতে বাড়িতে এসে দা, বল্লম দেখিয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবি করে প্রতিপক্ষের লোকজন।
এ বিষয়ে হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নান্দাইল মডেল থানার উপপরিদর্শক সালাম মিয়া জানান, মামলাটির পোস্টমর্টেম রিপোর্ট এখনো পাইনি, পেলেই চার্জশিট দেবেন।
আসামিদের বাড়িঘর লুটপাটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার ভাংচুর ও লুটপাটের একটি মামলা হয়েছে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক- খায়রুল ইসলাম, বার্তা সম্পাদক - সোহেল রানা
সম্পাদকীয় কার্যালয়- ৫২২ আইনুল্লাহ স্কুল রোড, স্বল্পমারিয়া, বএিশ, কিশোরগঞ্জ।
০১৯১২৫৫০৭২৭,০১৭২৪৫৭৪২১৭
Copyright © 2025 কালের নতুন সংবাদ. All rights reserved.