মধুপুর টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ
টাঙ্গাইলের মধুপুরে গত ৮ মে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কারচুপি, অনিয়ম, ও ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং এর অভিযোগ এনে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুনঃনির্বাচন দাবি করেছেন পরাজিত প্রার্থী ছরোয়ার আলম খান আবু। শনিবার (১১মে) দুপুরে মধুপুরের থানা মোড় এলাকায় তার নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই দাবি জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে মধুপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও ছরোয়ার আলম খান আবুর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব মাসুদ পারভেজ, মধুপুর বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মীর জহির উদ্দিন বাবর, ধনবাড়ী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী মেহেদী হাসান রনিসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
গত ৮মে মধুপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শোলাকুড়ী ইউনিয়ন হতে চার বার নির্বাচিত চেয়ারম্যান এডভোকেট মো. ইয়াকুব আলী আনারস প্রতীক নিয়ে জয়লাভ করেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি হলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ ছরোয়ার আলম খান আবু। তিনি নির্বাচন পরবর্তী তৃতীয় দিনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই অভিযোগ তোলেন।
সংবাদ সম্মেলনে পরাজিত দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী ছরোয়ার আলম খান আবু লিখিত বক্তব্যে বলেন, বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসারগণ জাল ভোট দিতে সহযোগিতা করেছে। মধুপুরের ২৫-৩০টি কেন্দ্রে দোয়াত-কলমের এজেন্ট বের করে দেওয়া হয়েছে। এজেন্টদের বুথ পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে। শোলাকুড়ি ও ফুলবাগচালা ইউনিয়নে ব্যাপক হারে জাল ভোট দেওয়া হয়েছে। কোন কোন কেন্দ্রে রাতেই ব্যালট পেপারে ছিল মেরে রাখা হয়েছে। ভোট গ্রহন শেষে বাক্স গুলো একত্র করে ভোটের বান্ডিল করার সময় এজেন্টদেরকে বের করে দিয়ে ভোটের বান্ডিল করা হয়। প্রায় প্রতিটি বান্ডিলে ২০/৩০টি করে দোয়াত কলম ও হোন্ডার ভোট আনারসের বান্ডিলের ভিতরে ঢুকিয়ে দিয়ে বান্ডিল করে ভোট গণনা করা হয়। ভোট গণনার আগেই ফলাফল শিট মনগড়াভাবে লিখে ফেসবুকে দেওয়া হয়েছে। উক্ত ফলাফল শিটে তার এজেন্টদের স্বাক্ষর ছিল না। বিকেল ৪ টায় ভোট গ্রহণ শেষে গননা করার কথা থাকলেও ৪ টা ১৫ মিনিট থেকে ফলাফল ঘোষনা শুরু হয়। এতে প্রমান হয় ফলাফলগুলো পুর্বেই তৈরী করা। সন্ধা ৭ টার মধ্যেই চেয়ারম্যান প্রার্থীকে বিজয়ী দেখানো হলেও ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের ক্ষেত্রে রাত্রি সাড়ে বারটা পর্যন্ত ফলাফল ঘোষণা করতে সময় লাগে। এই কাজে স্থানীয় এমপি নগ্নভাবে প্রশাসন যন্ত্রকে তার পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে ব্যবহার করেছেন। এই সকল ত্রুটি বিচ্যুতি এবং অনিয়মের অভিযোগ এনে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুনঃনির্বাচনের দাবি করেন তিনি।
ছরোয়ার আলম খান আবু আরো বলেন, নির্বাচনের পর থেকেই দোয়াত কলমের কর্মীদের উপর হামলা মারধর করা হচ্ছে। বিভিন্ন ইউনিয়নের ২০টি স্থানে হামলা, ভাঙ্গচুর ও লুটের বিষয় উল্লেখ করে বিএনপি জামাতের নৈরাজ্যের চেয়েও ভয়াবহ অবস্থা চলমান রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন এমতাবস্থায় নিরীহ জনমানুষের শান্তি এবং নিরাপত্তার জন্য আশু আইনানুগ ব্যবস্হা গ্রহন করা প্রয়োজন। সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তার ভোটার ও জনগনের পাশে দাঁড়ানোর জন্য এবং ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী জানান তিনি।
এ সময় মধুপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র মাসুদ পারভেজ বলেন, রিটার্নিং অফিসার প্রতিটি প্রার্থীর জন্য লেভেল প্লেইন ফিল্ড তৈরির পরিবর্তে একটি প্রার্থীকে বিজয়ী করতে কাজ করেছেন।