ওয়াসিম কামাল লিবিয়া থেকে
বাংলাদেশ দূতাবাস, লিবিয়া অত্যন্ত আনন্দঘন পরিবেশ ও বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাঙালির হাজার বছরের সংস্কৃতি ও বাঙালি জাতির শাশ্বত ঐতিহ্যের সর্বজনীন উৎসব পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন করেছে। দূতাবাস হতে বাংলা বর্ষবরণের জন্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পিঠাপুলির প্রদর্শনী এবং বাঙালির ঐতিহ্যের খাবার আয়োজনের মাধ্যমে বাংলাদেশের ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়। বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে লিবিয়ায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীগণ ও তাদের পরিবারবর্গ বর্ণিল পোষাকে সজ্জিত হয়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। লিবিয়ায় নিযুক্ত মান্যবর রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মুহাম্মদ খায়রুল বাশার অতিথিবর্গের সাথে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে দূতাবাস মিলনায়তনকে ব্যানার ও ফেস্টুন দিয়ে সুসজ্জিত করা হয়। অনুষ্ঠানমালার শুরুতে ত্রিপলীস্থ বাংলাদেশ কমিউনিটি স্কুল ও কলেজের ছাত্রছাত্রীদের পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয় জাতীয় সংগীত এবং বাঙালির বৈশাখ বন্দনার জনপ্রিয় গান-‘এসো হে বৈশাখ…এসো এসো’ গানটির মাধ্যমে। এরপর বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। সাংস্কৃতিক আয়োজনে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে একে একে পরিবেশন করা হয় একক ও দলীয় সংগীত, নৃত্য, আবৃত্তি এবং ঋতুভিত্তিক ফ্যাশন শো। এসকল পরিবেশনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বাঙালির নিজস্ব কৃষ্টি, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরে।
মান্যবর রাষ্ট্রদূত তাঁর সমাপনী বক্তব্যের শুরুতে লিবিয়া প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকগণকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন বাঙ্গালি জাতির অসাম্প্রদায়িক চেতনার উৎস এবং হাজার বছরের বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে ধারণ ও লালনের এক অনন্য নিদর্শন। এছাড়াও তিনি বাঙালি সংস্কৃতির সুদীর্ঘ ঐতিহ্য তুলে ধরে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কূটনৈতিক উদ্যোগে মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ইউনেস্কো মানবজাতির ‘বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে; যা বাংলাদেশের নববর্ষ উদযাপনে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। মান্যবর রাষ্ট্রদূত প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝে পহেলা বৈশাখের ঐতিহ্যকে ছড়িয়ে দেওয়া জন্য সকলকে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি দেশে ও প্রবাসে বসবাসরত বাংলাদেশের সকল নাগরিকের জন্য বাংলা নববর্ষ নতুন আশা, সুখ-সমৃদ্ধি ও শান্তি বয়ে নিয়ে আসবে বলে আশা ব্যক্ত করেন।
বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠানমালার শেষ পর্যায়ে লিবিয়ায় বসবাসরত প্রবাসী পরিবারবর্গের অংশগ্রণহণে অনুষ্ঠিত হয় বাঙালির ঐতিহ্যবাহী পিঠাপুলির প্রদর্শনী। এতে প্রায় ত্রিশ পদের বাংলার গ্রামগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন পিঠা স্থান পায়। পরিশেষে দূতাবাসের পক্ষ থেকে উপস্থিত অতিথিদের ঐতিহ্যবাহী বৈশাখী ভোজের মাধ্যমে বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।