মোহাম্মদ মাসুদ
বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তবর্তী বাসিন্দারা চরম আতংকে প্রতিটা মুহূর্ত।সীমান্তে উদ্ভূত পরিস্থিতি-নিরাপত্তায় সদা তৎপরের নির্দেশ-বিজিবি মহাপরিচালক।
সীমান্তে ২জনের মৃত্য ও ৫জন গুলিবিদ্ধ।জীবনঝুঁকি নিরাপত্তাহীনতায় গ্রামশূন্য,গৃহহীন সীমান্তবাসী। চরম আতংকে গ্রাম ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে গ্রামবাসী। মিয়ানমারের গোলাগুলিতে জন মানব শূন্য বাংলাদেশ সীমান্ত। জীবন বাঁচাতে নিজ গৃহ গ্রাম ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছেন গ্রামবাসী। মিয়ানমার অনুপ্রবেশকারীরা তাদের জীবন ঝুঁকি নিয়ে। তাদের মাতৃভূমি নিজ দেশ ছেড়েই কোনরকম জীবন রক্ষা পেল। পরদেশে নিল জীবন আশ্রয়।প্রাণ বাঁচাতে পরদেশে অনুপ্রবেশ করে ফিরে পেল নতুন জীবন।এমন পরিস্থিতি মোকাবেলায় সীমান্তে উদ্ভূত পরিস্থিতি ও সীমান্তবাসীর নিরাপত্তায় সদা তৎপরের নির্দেশ-বিজিবি মহাপরিচালক।
..
দলে দলে পালিয়ে আসছে মায়ানমার সীমান্ত রক্ষীরা। আজ নতুন করে টেকনাফের হোয়াইক্যং সীমান্ত দিয়ে ৬৩ জন নতুন প্রবেশ করেছে। এখন পর্যন্ত সর্বমোট ২৬৪+৬৩=৩২৭ জন অনুপ্রবেশ করেছে।অনুপ্রবেশকারী দের মধ্যে বিজিপির সদস্য,সেনাবাহিনী,কাস্টম কর্মকর্তা সাধারণ নাগরিক রয়েছে।
মিয়ানমারে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের লড়াইয়ের মধ্যে গোলাগুলি কিছুটা কমেছে।সেইসাথে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘাতও কিছুটা কমেছে।তবে নতুন করে মায়ানমারের ৬৩ বিজিপির অনুপ্রবেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির সদস্য,সেনাবাহিনী,
বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।তবে সীমান্ত পরিস্থিতি বিজেপি নিয়ন্ত্রণে আছে।
০৭ফেব্রুয়ারি,সকালে বিজিবি’র কক্সবাজার ব্যাটালিয়ন (৩৪ বিজিবি) এর দায়িত্বপূর্ণ বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু ও ঘুমধুম সীমান্ত এবং তৎসংলগ্ন বিওপি পরিদর্শন করেন।
.
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম বিডিনিউজ বলেন, বুধবার কক্সবাজারের টেকনাফের উলুবনিয়া সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারের ওই সীমান্তরক্ষীরা বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। পরে তাদের হেফাজতে নেয় বিজিবি।আজ নতুন করে টেকনাফের হোয়াইক্যং সীমান্ত দিয়ে ৬৩ জন প্রবেশ করেছে। এখন পর্যন্ত সর্বমোট ২৬৪+৬৩=৩২৭ জন। সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির আরো ৬৩ জন।মিয়ানমারে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের লড়াইয়ের মধ্যে গোলাগুলি কিছুটা কমলেও নতুন করে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছেন। জীবন রক্ষার্থে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, ওএসপি, বিএসপি, এসইউপি, এনডিসি, পিএসসি, এমফিল (Major General Mohammad Ashrafuzzaman Siddiqui, OSP, BSP, SUP, ndc, psc, M Phil) আজ বিজিবি’র কক্সবাজার রিজিয়নের আওতাধীন বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্ত পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে বিজিবি মহাপরিচালক সীমান্তে দায়িত্বরত সকল পর্যায়ের বিজিবি সদস্যদের খোঁজ খবর নেন এবং তাঁদের সাথে মতবিনিময় করেন। এসময় তিনি দেশ মাতৃকার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবাইকে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সীমান্তে উদ্ভূত যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সদা তৎপর থাকার নির্দেশ দেন। একই সাথে তিনি অত্যন্ত দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালনের জন্য দায়িত্বরত সকল বিজিবি সদস্যের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
পরবর্তীতে বিজিবি মহাপরিচালক মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘর্ষের জেরে প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী মায়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি), মায়ানমার সেনাবাহিনী, ইমিগ্রেশন সদস্য, পুলিশ ও অন্যান্য সংস্থার সকল সদস্যদের খোঁজ খবর নেন।
পরে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, সীমান্ত পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বিজিবি’র নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে ধৈর্য ধারণ করে এবং আন্তর্জাতিক সুসম্পর্ক বজায় রেখে পরিস্থিতি মোকাবিলার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, অবৈধভাবে আর একজনকেও বাংলাদেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না। সীমান্তে উদ্ভূত যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত রয়েছে বলেও তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
.
অতঃপর বিজিবি মহাপরিচালক আহত অবস্থায় আগত এবং কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসারত বিজিপি সদস্যদের সরেজমিনে দেখতে যান এবং চিকিৎসা বিষয়ে খোঁজ খবর নেন।পরিদর্শনকালীন বিজিবি মহাপরিচালকের সাথে বিজিবি সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, কক্সবাজার রিজিয়ন কমান্ডার, রামু সেক্টর কমান্ডার ও কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের অধিনায়কসহ বিজিবি’র অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
..
হোয়াইক্যং মডেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারী বলেন,"মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘাত কিছুটা কমেছে। গত রাত থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত সীমান্তের কাছাকাছি এলাকায় গোলাগুলির শব্দ কমেছে। বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকটা শব্দ শোনা গেলেও বিস্ফোরণের শব্দ প্রায় নেই। এর মধ্যেই বেলা ১২টার দিকে উলুবনিয়া সীমান্ত দিয়ে ৬৩ জন ঢুকেছে।”
এ ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সিরাজুল ইসলাম লালু বলেন, “আজ বেলা ১১টার দিকে কিছুক্ষণ গোলাগুলির পর মিয়ানমার থেকে কিছু বিজিপি সদস্য ছত্রভঙ্গ হয়ে বাংলাদেশে ঢুকতে শুরু করে। পরে বিজিবি সদস্যরা তাদের নিরস্ত্র করে বাংলাদেশে ঢোকায়।”
উল্লেখ্যঃ ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে মিয়ানমারের ক্ষমতা নেয় দেশটির সেনাবাহিনী। ২০২৩ সালের অক্টোবরের শেষ দিক থেকে মিয়ানমারের তিনটি জাতিগত বিদ্রোহী বাহিনী একজোট হয়ে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে সমন্বিত আক্রমণ শুরু করে।
সম্পাদক ও প্রকাশক- খায়রুল ইসলাম, বার্তা সম্পাদক - সোহেল রানা
সম্পাদকীয় কার্যালয়- ৫২২ আইনুল্লাহ স্কুল রোড, স্বল্পমারিয়া, বএিশ, কিশোরগঞ্জ।
০১৯১২৫৫০৭২৭,০১৭২৪৫৭৪২১৭
Copyright © 2025 কালের নতুন সংবাদ. All rights reserved.