মোঃ সোহেল মিয়া, স্টাফ রিপোর্টার, হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ):
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে তীব্র শীতে বিভিন্ন ধরনের পিঠা বিক্রির ধুম পড়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে এসব পিঠা বিক্রি। প্রতিটি দোকানেই থাকে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। গ্রাম কিংবা শহরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ হরেক রকমের পিঠা রাস্তায় দাঁড়িয়ে খাওয়ার পাশাপাশি কিনেও নিয়ে যাচ্ছেন বাসা-বাড়িতে। উপজেলা সদরের প্রধান প্রধান সড়কের ফুটপাত ছাড়াও বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার অলি-গলিতে বিক্রেতারা পিঠা বিক্রি করছেন। শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে দোকানের সংখ্যাও। এসব দোকানে শ্রমজীবী মানুষই তাদের প্রধান ক্রেতা। তবে বিভিন্ন এলাকা থেকে উচ্চ বিত্তরাও এসে তাদের পরিবার-পরিজনের জন্য ফুটপাত থেকে হরেক রকমের পিঠা কিনে নিয়ে যান বাসায়। পিঠার জন্য প্রচুর ক্রেতা থাকায় অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেও পিঠা কিনতে হয় সবাইকে।
সরজমিনে তথ্য সংগ্রহকালে দেখা যায়, এ কনকনে শীতে উপজেলা সদরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, হাইস্কুলের সামনে, হাসপাতাল মোড়,এলএসডি গোডাওনের আস পাশেসহ উপজেলা শহরের বিভিন্ন রাস্তার মোডের ফুটপাত ও পৌর শহরের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার রাস্তার মোড়ে দেদাড়ছে এসব পিঠা বিক্রি হচ্ছে।
দোকানিরা ফুটপাতে মাটির চুলা, এলপি গ্যাস ও কোরোসিনের চুলা বসিয়ে পিঠা তৈরি করছেন। এসব দোকানে চিতই পিঠা, মেরা পিঠা, চেপাপিঠার পাশাপাশি এবার শীতে চিতই পিঠা ও ভাপা পিঠারই কদর বেশি। ক্রেতাদের অর্ডার অনুযায়ী খেজুরের গুড়, ধনেপাতা ও কাঁচা মরিচ দিয়ে ভাঁপা পিঠা তৈরি করে দেওয়া হয়। এছাড়া চিতই পিঠার সম্পর্কে ক্রেতাদেরকে সরিষার ভর্তা ও শুটকির ভর্তা দেওয়া হচ্ছে। গরম গরম পিঠা পেয়ে ক্রেতারাও দারুন খুশি। প্রতিটি বড় ভাঁপা পিঠা ১০-২০ টাকা ও প্রতিটি ছোট ভাঁপা পিঠা ১০ টাকা ও চিতল পিঠা ১০ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতিটি বড় সাইজের চিতই পিঠা ১০ টাকা এবং ছোট সাইজের চিতই পিঠা ৫ টাকা করেও বিক্রি করা হচ্ছে। এসময়
পৌর শহরের হাইস্কুল মার্কেটের পিঠা বিক্রেতা মোঃ হাসিম মিয়া জানান, প্রতিদিন তিনি গড়ে চার হাজার টাকার পিঠা বিক্রি করেন। এতে তার লাভ হয় ৯০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা। তিনি জানান,চিতই পিঠার সঙ্গে ক্রেতাদের চাহিদানুযায়ী সরিষার ভর্তা ও শুটকির ভর্তা দেন তিনি। পিঠা নিতে আসা শাহজাহান মিয়া ও সাজন মিয়াসহ অনেকই জানান, আগে শীতের দিনে বাড়িতে মা-চাচিরা তাদেরকে হরেক রকমের পিঠা বানিয়ে খাওয়াতেন। এখন নানা কারণে ঐসব স্মৃতির গহীনে হারিয়ে গেছে। তাই সুযোগ পেলেই পৌর শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে চিতই পিঠা ও ভাঁপা পিঠা কিনে নিয়ে যান তারা। তাদের মতো অনেকই এসব পিঠা কিনে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন।তাই এবার শীতে পিঠা বিক্রি যেন নতুন মাত্রা পেয়েছে।