হাওরাঞ্চল প্রতিনিধিঃ
কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার একমাত্র উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান “রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সরকারি কলেজ”র এইচএসসি পরীক্ষার পাশের হার মাত্র ২০.১২%। এই নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে পুরো জেলা জুড়ে ।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সরকারি কলেজ থেকে ২০২৩ সালে এইচএসসি পরীক্ষার ৫১৭ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। ৫১৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে মাত্র ১০৩ জন এবং পাশের হার ২০.১২%। গত বছর উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশের হার ছিলো ৮২%।
ফলাফল প্রকাশের পর শিক্ষার্থী, অভিভাবক, সচেতন নাগরিকদের মধ্যে আলোচনা তৈরি হয়েছে; অন্যদিকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন এলাকাবাসী।অনেকেই ফেসবুকে লিখছেন নানা অভিমত, ব্যাক্ত করছেন অভিযোগ।
শামীম রেজা নামের জনৈক লেখক ফেসবুকে লিখেছেন “পাশের হারের বাম্পার ফলনের যুগে এই পুষ্টিহীন ফলাফল কিসের আলামত????
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, কলেজটা সাবেক রাষ্ট্রপতির নামে তৈরি, এলাকার একমাত্র উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেখানে শিক্ষকরা খেলে ধুলে পড়াশোনা করাচ্ছে। মনে চাইলে কলেজে আসে আবার কলেজে আসলেও ক্লাসে আসে না। শিক্ষার্থীরা কলেজে গিয়ে ঘুরাঘুরি-আড্ডা দিয়ে চলে আসে এই বিষয়ে কারো কোনো দায়িত্ব নাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দ্বাদশ শ্রেণির কিছু শিক্ষার্থীরা জানায়, আমরা কলেজে যাই কিন্তু স্যাররা ক্লাসে আসে না। স্যার না থাকলে আমরা কিভাবে ক্লাস করবো। বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে বাড়িতে চলে যাই। কোন শিক্ষক কোন বিষয়ে পড়াবেন ঐটাও জানে না অনেক শিক্ষার্থী।
উল্লেখ্য যে, ইটনা উপজেলা থেকে জেলা শহরের উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দূরে হওয়ায় হাওর অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সমস্যা সমাধানের জন্য সাবেক রাষ্ট্রপতি তৎকালীন স্পীকার থাকাকলীন আবদুল হামিদ মহোদয় নিজ উদ্যোগে নামে ১৯৯৮ সালে ইটনা মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। পরবর্তীতে ইটনা মহাবিদ্যালয়টির উন্নয়ন ও অবকাঠামোসহ রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সরকারি কলেজে উন্নীতকরণ করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেও শিক্ষার মানের উন্নয়ন হয়নি রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সরকারি কলেজে। বোর্ড পরীক্ষায় এইরকম অসন্তুষ্ট ফলাফলের জন্য দায়ী মনে করা হচ্ছে উক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ ইসলাম উদ্দিন জানান, এই বছর পাশের হার কম হয়েছে। তিনি আরো জানান, গতবছর আমাদের কলেজ ভালো রেজাল্ট করায় মিঠামইন কলেজের অধ্যক্ষ সাবেক রাষ্ট্রপতির ভাই বীরমুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবদুল হক সাহেব প্রশাসনকে চাপ দিয়েছে পরীক্ষার কেন্দ্রে কঠোর নজরদারি বাড়ানো জন্য যার প্রেক্ষিতে এই বছর এত খারাপ রেজাল্ট হয়েছে।