মোহাম্মদ মাসুদ বিশেষ প্রতিনিধি
চট্টগ্রামে পাহাড়কাটা বিপর্যয় রোধে আলোচনা ও করণীয় বিষয়ক মতবিনিময় সভা এএলআরডি,এফপিসি এবং বেলা ‘র সমন্বিত উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়।আলোচনায় বেলা ‘র প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বক্তব্যে তিনি বলেন,
চট্টগ্রামকে বাঁচাতে হলে,পাহাড়কাটা বন্ধ করতে হবে। পাহাড় বাঁচলে, বাঁচবে চট্টগ্রাম । আজ ১৯ অক্টোবর-২৩ নগরীর হোটেল পেনিনসুলার ডালিয়া হলে অনুষ্ঠিত হয়।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারব্র ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ,প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
বক্তব্যে তিনি বলেন চট্টগ্রামকে বাঁচাতে হলে,পাহাড়কাটা বন্ধ করতে হবে। শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন বেলা ‘র প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
মতবিনিময় আলোচনা সভায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মো. ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন বেলা ‘র প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান,প্যানেল অতিথি হিসেবে আলোচনায় অংশ নেন মো. সফিজুল ইসলাম,এসপি ইনটেলিজেন্স (ডিয়াইজি) চট্টগ্রাম, ড. শফিকুল হায়দার চৌধুরী , উপদেষ্টা- ফোরাম ফর প্ল্যানড, (এফপিসি) চট্টগ্রাম, ড. সিকান্দার খান,ফোরাম ফর প্ল্যানড, (এফপিসি) চট্টগ্রাম। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন: ড. কামাল হোসেন,সাবেক অধ্যাপক,বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ, পরিবেশ অধিদপ্তর, পাহাড় রক্ষা কমিটি, চট্টগ্রামের প্রেসক্লাব, নাগরিক আন্দোলন, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এবং ইপসা সহ এনজিও প্রতিনিধিবৃব্দ। প্রধান অতিথি ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন চট্টগ্রাম আমার জন্মস্থান, চট্টগ্রামেই আমার বেড়ে উঠা, আমি এখনো চট্টগ্রামেই বেশীর ভাগ সময় বসবাস করি তাই চট্টগ্রামের পাহাড়কাটা সহ সকল সমস্যা আমি অবগত। তিনি আরো বলেন আমরা চাইলেও বাংলাদেশকে সুইজারল্যান্ড বানানো সম্ভব নয়, আমাদের বাস্তবতায় অনেক কাজ-ই বুঝে শুনে এগুতে হয়, পাহাড়গুলো আমাদের পিলার, পাহাড়ে কিছু ইন্সটিটিউট আছে বলেই কিছু পাহাড় টিকে আছে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় ল্যান্ডজোনিং- স্যাটেলাইট ইমেজের মাধ্যমে প্রতি কোয়ার্টারে তথ্য সংগ্রহ করছে। তিনি তাঁর বক্তব্যের সুস্পষ্ট বার্তা দেন পাহাড় কাটা বন্ধ করতে হবে, যেগুলো গেছে সেগুলো পুনঃ উদ্ধার করা সম্ভব নয়, যেগুলো আছে সেগুলো বাঁচাতে হবে। তিনি জেলা প্রশাসক কে এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা প্রদান করবেন বলে জানান। ড. কামাল উদ্দিন তাঁর প্রবন্ধে উপস্থাপন করেন একসময় চট্টগ্রাম নগরীতে ছোট বড় প্রায় ২০০ পাহাড় ছিলো, ইতোমধ্যে বিলুপ্ত হয়ে ১২০ টি পাহাড়, ১৯৭৬ সালে চট্টগ্রাম নগরীর ৫টি থানা যথাক্রমে বায়োজিদ, খুলশী, পাঁচলাঈশ, পাহাড়তলী ও কোতোয়ালি এলাকায় মোট পাহাড় ছিলো ৩২.৩৭ বর্গকিলোমিটার ২০০৮ সালে সেটি কমে দাঁড়িয়েছে ১৪.২ বর্গকিলোমিটার, অর্থাৎ বিগত ৩২ বছরে পাহাড় নিশ্চিহ্ন করা হয়েছে প্রায় ৫৭ শতাংশ পাহাড়। বেলা ‘র প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন জেলা প্রশাসনগুলো পাহাড় ও পাহাড় কাটার তথ্য একটি তালিকা দেয়ার কথা, কিন্তু সেটা এখনো প্রদান করেনি, এছাড়াও তিনি পাহাড় কাটা রোধে প্রত্যোকটি পাহাড়ে সাইনবোর্ড, রিটানিং ওয়াল তৈরি, অবৈধ বসবাস অপসারণ, গ্যাস, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করণ এবং বৃক্ষরোপন করার উপর গুরুত্বারোপ করেন এবং অন্তত ৪টি বহুল প্রচারিত পত্রিকায় কোন কোন পাহাড় কাটা যাবেনা, এবং কি ধরণের শাস্তি প্রদান করা হবে সেগুলো বিজ্ঞাপন আকারে প্রকাশের দাবী জানান। উল্লেখিত ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও এ সময় সচেতন মহল ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ আরো অনেকেই।