বিশেষ প্রতিনিধি::( সুনামগঞ্জ)
সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের বিভিন্ন অনিয়মের প্রতিবাদ করে রোষানলে পড়েছেন একজন প্রধান শিক্ষক। এবার পার্বত্য এলাকা থেকে সদ্য স্ট্যান্ডরিলিজ হয়ে আসা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে ওই প্রতিবাদী প্রধান শিক্ষককে অব্যাহতি দিয়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ছাড়া কোনও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্ব থেকে প্রধান শিক্ষককে অব্যাহতি দেওয়ার বিধি নেই।
জানা গেছে শাল্লা উপজেলার ডুমড়া এলাকার বাসিন্দা অনাদি কুমার তালুকদার উপজেলার জাতগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন দীর্ঘদিন ধরে। গত জুন মাসে পার্বত্য এলাকা থেকে স্ট্যান্ডরিলিজ হয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুস সালাম শাল্লায় যোগদান করেছেন। এখানে এসেও তিনি নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছেন। এসবের প্রতিবাদ করায় তার রোষানলে পড়েন প্রধান শিক্ষক অনাদি কুমার তালুকদার। গত ১ আগস্ট মো. আব্দুস সালাম তার এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে অনাদি তালুকদারকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেন। তার বিরুদ্ধে অনুমতি না দিয়ে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিতির অভিযোগ, অসাদাচরণসহ নানা অভিযোগে এই অব্যাহিত আদেশ দেন তিনি। অব্যাহতি আদেশে ওই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মিতালি রানী তালুকদারকে প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রদানের আদেশ অর্পন করেন আব্দুস সালাম। বিষয়টি প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
প্রধান শিক্ষক অনাদি কুমার তালুকদার বলেন, আমি সরকারি বিধি মেনে আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করছি। আমি কোন অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত নই। কিন্তু গত ১ আগস্ট আমাকে দায়িত্ব থেকে সড়িয়ে অন্য আরেকজনকে দায়িত্ব অর্পনের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুস সালাম বলেন, এই প্রধান শিক্ষক একজন বেয়াদব টাইপের। তার আচরণ ঠিক না। আমার সঙ্গে ও ইউএনও সাহেবের সঙ্গেও বেয়াদবি করেছেন। তিনি এমপি সাহেবের দোহাই দিয়ে চলেন। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাগ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান। তাই তাকে দায়িত্ব থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়ে আরেকজনকে প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার আদেশ দিয়েছি। এই আদেশ দিতে পারেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রশাসনিক কাজ থেকে বিরত থাকার আদেশের এখতিয়ার আমার আছে। পার্বত্য এলাকা থেকে স্ট্যান্ড রিলিজ হয়ে সুনামগঞ্জের দুর্গম এলাকা শাল্লায় যোগদানের বিষয়টি তিনি স্বীকার করেন।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মাহবুব জামান বলেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসার কেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারই কোনও প্রধান শিক্ষককে এভাবে দায়িত্ব থেকে সড়িয়ে দেওয়ার নিয়ম নেই। তিনি এটা কিভাবে করলেন আমরা ব্যাখা চাইবো। তাছাড়া বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান থাকা অবস্থায় এধরনের কাজ করারও কোন সুযোগ নেই।