বিশেষ প্রতিনিধি
কক্সবাজারের চকরিয়া থানাধীন বিচ্ছিন্ন দুর্গম ছিলখালি এলাকায় অভিযানে ৫টি আগ্নেয়াস্ত্র,বিপুল পরিমাণ বুলেট/কার্তুজ,সেনাবাহিনীর নকল ইউনিফর্ম,অত্যাধুনিক বাইনোকুলার ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারসহ ডাকাত দলের কাছে অস্ত্র ভাড়াদানকারী চক্রের ৭সদস্যকে র্যাব-১৫ কর্তৃক আটক।
৬জুলাই,মধ্যরাতে দুর্গম ছিলখালি এলাকায় অভিযানে
লবণের বড় নৌকার আকস্মিকতায় ও র্যাব সদস্যদের চৌকস সক্রিয় ঝটিকা কৌশলী অবস্থানের গুলি ছোড়ার কোন সুযোগ পায়নি। এ সময় চক্রটির ৭অস্ত্রধারী সদস্যকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় র্যাব।
চকরিয়া ও মহেশখালী থানাসহ উপকূলবর্তী বিভিন্ন এলাকায় সশস্ত্র ডাকাত দলের নিয়মিত তৎপরতার প্রেক্ষিতে র্যাব-১৫, সশস্ত্র ডাকাত দলের সাথে জড়িত অপরাধীদেরকে গ্রেপ্তার প্রচেষ্টার পাশাপাশি তাদের অস্ত্রের উৎস খুঁজে বের করতে অনুসন্ধানে নামে। এরই ধারাবাহিকতায় চকরিয়া থানাধীন স্থল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন দুর্গম ছিলখালির ঘরবসতিহীন সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় অবস্থানকালে একটি চক্র টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন ডাকাত দলের নিকট আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ,দেশীয় অস্ত্রসহ ডাকাতিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন সামগ্রী নিয়মিত ভাড়া দিয়ে থাকে।
এক ঘন্টার পায়ে হাটা দুর্গম পথ ব্যতীত সেখানে যাওয়ার আর কোন স্থলপথ নেই। আশেপাশে ১/২ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে অপরিচিত কোনো মানুষ ঢুকলেই ডাকাতদের নিযুক্ত চেকারদের মাধ্যমে তাদের কাছে তথ্য চলে যায় এবং তখন তারা গা ঢাকা দিয়ে দেয়।
উক্ত তথ্যে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সিপিএসসি এর একটি চৌকস আভিযানিক দল ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতঃ লবণের বড় নৌকার পাটাতনে লুকিয়ে যাত্রার একপর্যায়ে সংযুক্ত একটি ছোট খালের মাধ্যমে আস্তানার একেবারে নিকটবর্তী হয়ে কেউ কিছু বুঝে উঠার আগেই র্যাবের আভিযানিক দল নৌকা থেকে নেমে সেখানে অতর্কিত অভিযান শুরু করে।
উপস্থিত দুষ্কৃতকারীরা সশস্ত্র অবস্থায় থাকলেও পরিস্থিতির আকস্মিকতায় ও র্যাব সদস্যদের চৌকস সক্রিয় ঝটিকা কৌশলী অবস্থানের গুলি ছোড়ার কোন সুযোগ পায়নি। এ সময় চক্রটির ৭অস্ত্রধারী সদস্যকে অস্ত্রসহ অস্ত্র কারবারীদের আটক করে।
ধৃতব্যক্তিদের ও তাদের আস্তানা তল্লাশীতে সর্বমোট ২টি ওয়ান শুটার এক নলা বন্দুক, ১টি ওয়ান শুটার কাটা রাইফেল,১টি ওয়ান শুটার রাইফেল (এলজি),১টি এয়ার রাইফেল/গান,২ রাউন্ড মেশিনগান (এমজি) এর বুলেট,১০ রাউন্ড রাইফেলের বুলেট,১১রাউন্ড ১২বোর কার্তুজ, ৮৯ রাউন্ড এয়ার রাইফেল বল, ১টি বড় রামদা, ১সেট সেনাবাহিনীর ভুয়া ইউনিফর্ম,১টি বাইনোকুলার,৮টি মোবাইল ফোন এবং ১০টি সীম কার্ড উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের বিস্তারিত পরিচয় ১। খায়রুল আমিন (৪৩)পিতা-মৃত সিদ্দিক, সাং-নলবনিয়া, থানা-চকরিয়া, জেলা-কক্সবাজার,২। মাহাবুব তৈয়ব (৬৪) পিতা-মৃত আব্দুস ছাত্তার, সাং-মধ্যম শিয়াপাড়া, থানা-ঈদগাঁও,জেলা-কক্সবাজার৩। নূর ইসলাম (৫০) পিতা-মৃত নজরুল মিয়া,সাং-আজিজ নগর, থানা-লামা, জেলা-বান্দরবান,৪। মোঃ আব্দুল হাসিম (৩৫), পিতা-মৃত ডাঃ আব্দুল মোতালিব, সাং-দরগাহ পাড়া, থানা-চকরিয়া, জেলা-কক্সবাজার,৫। জুলফিকার আলী ভুট্টো (৪৮) পিতা-মৃত আব্দুর শুক্কুর,সাং-দক্ষিণ মেধাকচ্ছপিয়া, শান্তি বাজার, থানা-চকরিয়া, জেলা-কক্সবাজার,৬। মোঃ সেলিম (২৮)পিতা-মোঃ হোসেন,সাং-পূর্ব হাজীপাড়া,থানা-চকরিয়া, জেলা-কক্সবাজার এবং ৭। শাহাব উদ্দিন (৩২) পিতা-মোঃ হোসেন,সাং-গর্জনতলী,থানা-চকরিয়া,জেলা-কক্সবাজার বলে জানা যায়।
আটককৃত চক্রটি জানায়,তারা আটককৃত আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ,বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইউনিফর্মের আদলে তৈরী নকল ইউনিফর্ম,দেশীয় অস্ত্র এবং অন্যান্য সামগ্রী মূলত বিভিন্ন ডাকাতদলের নিকট বিক্রয় এবং ক্ষেত্রবিশেষ ভাড়ায় প্রদান করে থাকে। এছাড়াও উদ্ধারকৃত মোবাইল ও সিম ব্যবহার করে ক্রেতা ও ভাড়াগ্রহনকারীদের সাথে যোগাযোগ স্থাপনসহ বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকান্ড করে আসছে বলে জানা যায়। উদ্ধারকৃত অস্ত্র-গোলাবারুদ ও অন্যান্য আলামতসহ ধৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণার্থে চকরিয়া থানায় লিখিত এজাহার দাখিল করা হয়েছে। তথ্য নিশ্চিত করেছেন,অধিনায়কের পক্ষে মোঃ আবু সালাম চৌধুরী অতিঃ পুলিশ সুপার সিনিয়র সহকারী পরিচালক (ল’ এন্ড মিডিয়া)