নিজস্ব প্রতিবেদক
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলা
ছাত্রদলের আহ্বায়ক তিতুমীর হোসেন সোহেলের গ্রেফতারের প্রতিবাদে পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ মিছিলে আওয়ামী লীগের হামলা । ঘটেছে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া।
শনিবার (১ জুলাই) দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলা সদরে বিএনপি কার্যালয়ের সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
এতে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকসহ অন্তত ৩০ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। ভাঙচুর হয়েছে সাত থেকে আটটি মোটরসাইকেল। বিএনপির অভিযোগ, পুলিশের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগ-যুবলীগ এ হামলা করেছে।
এ নিয়ে পরে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়।
এ ঘটনায় ছাত্রলীগ যুবলীগেরও ১৭ নেতাকর্মীও আহত হয়েছেন বলে আওয়ামীলীগ জানিয়েছে।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক
তিতুমীর হোসেন সোহেলের গ্রেফতারের প্রতিবাদে পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল বিএনপির । এ উপলক্ষে শনিবার সকাল থেকে সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানের নেতৃত্বে উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা অষ্টগ্রামের জিরোপয়েন্ট এলাকায় জড়ো হন। দুপুরে সেখান থেকে তারা মিছিল নিয়ে সমাবেশের উদ্দেশ্যে বিএনপি কার্যালয়ের সামনের দিকে যেতে থাকেন। এ সময় ছাত্রলীগ-যুবলীগও একটি পাল্টা মিছিল নিয়ে ওই এলাকায় আসে।
বিএনপির নেতা-কর্মীরা বলছেন, ছাত্রলীগ-যুবলীগ বিনা উসকানিতে পুলিশের নেতৃত্বে তাদের ওপর হামলা চালায়। এ হামলায় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন মুকুল, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য-সচিব জুবায়ের হাছান ইয়ামিন, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন আনা, উপজেলা বিএনপির সদস্য সাইফুল হক শাহীন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সাইফুল ইসলাম, রোকন মিয়া, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক জাবেদ, দেওঘর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল মুনসুর, বাঙ্গলপাড়ার ইউনিয়ন কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক রইস উদ্দিনসহ অন্তত ৩০জন আহত হন।
বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, তারা শান্তিপূর্ণভাবেই মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা-কর্মীরা পরিকল্পিতভাবে রামদা, হকিস্টিক, লোহার রড দেশীয় অস্রাদি নিয়ে হামলা চালান। পুলিশ উপস্থিত থেকে পেটানোর নির্দেশ দেয় বলেও অভিযোগ । হামলায় ৩০ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৫ জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।
পুলিশের উপস্থিতিতে আওয়ামী লীগের এমন হামলার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ বীরমুক্তিযোদ্ধা এ্যাড,ফজলুল রহমান বলেন।তিনি বলেন এমন ন্যাক্কার জনক হামলার নিন্দা জানানোর ভাষা আমার নেই। গণতান্ত্রিক দেশে এটা কাম্য নয়।’
হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে অষ্টগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম জেমস বলেন, বিএনপির পূর্বঘোষিত কর্মসূচি ছিল জিরো পয়েন্টে। আমরা সেদিকে যাইনি। আমাদের ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা অষ্টগ্রাম বাজার এলাকায় মিছিল করছিলেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি আগামী ৪ তারিখে অষ্টগ্রামে আসবেন এ উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে মিছিল ছিল।
এদিকে এ ঘটনার পর পুলিশ কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক মাহাবুব আলম আক্তার, বাঙালপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আলম,ইটনা উপজলা যুবদল নেতা রিয়েল মোল্লাকে আটক করেছে পুলিশ।
অষ্টগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুর্শেদ জামান বলেন,দুদলের পাল্টাপাল্টি মিছিল থেকে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। তখন পুলিশ মাঝখানে অবস্থান নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।
পুলিশের বিরুদ্ধে আনা পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ অস্বীকার করে ওসি মুর্শেদ।
তবে তিনি বলেন ঘটনায় এখন পর্যন্ত কারও পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।