তৌহিদুল ইসলাম সরকার, স্টাফ রিপোর্টার:
অনাবৃষ্টি ও করতাপে পুড়ছে দেশ, তীব্র গরমে আবেদন শিশুদের, আল্লাহ মেঘ দে, পানি দে, ছায়া ও বাতাস দে রে তুই। এই স্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত হচ্ছে প্রত্যন্ত এলাকায় বসতবাড়ির উঠানে উঠানে গিয়ে মাথায় স্টিলের বল এর ওপরে বাঁশের বেত দিয়ে বানানো চালনা দিয়ে বলের মধ্য পানি দিয়ে সেই পানি বৃষ্টির নেয় ছিটিয়ে ছিটিয়ে তাদের আনন্দ ও উল্লাস একটু স্বস্তির পাওয়ার মত বৃষ্টির অপেক্ষায়।
জ্যৈষ্ঠের তীব্র গরম, অনাবৃষ্টি আর সঙ্গে লোডশেডিংয়ে সারাদেশের ন্যায় নান্দাইলের মানুষদেরও হাঁসফাঁস অবস্থা। অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। গরম থেকে রেহাই পেতে ইতিমধ্যে অনেকেই ঘনঘন ঠান্ডা পানি পান করছেন, আর মাথা ভিজিয়ে নিচ্ছেন, আবার কেউ কেউ একাধিকবার গোসল করা শুরু করেছেন।
এদিকে সারাদিনের শ্রম খাটুনির পর রাতে স্বস্তির ঘুম থেকে বঞ্চিত থাকছেন এলাকাবাসী। রাতে যেমন বিদ্যুৎ চলে গিয়ে কোথাও আবার ভোরের দিকে এলেও সকাল হতেই ফের চলে যায় বিদ্যুৎ। তীব্র গরমে দফায় দফায় বিদ্যুৎ চলে যাওয়া নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়ছে সাধারণ মানুষ। বিদ্যুতের অভাবে কোনো কোনো গ্রাহক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
গ্রাহকদের দাবি দিনে ৪ থেকে ৫ বার, আবার কোন কোন এলাকায় পাঁচ থেকে ছয়বারও বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করছে। একটানা দুই থেকে ৩ ঘণ্টার বেশিও লোডশেডিং হচ্ছে কোথাও। এতে কর্মজীবী মানুষের দৈনন্দিন কাজে চরম ব্যাঘাত ঘটছে।
ব্যবসায়ীরা বলছে বিদ্যুৎ না থাকায় ক্রেতা সংকটে ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা। করোনা পরবর্তী সময়ে বৈশ্বিক নানা সংকটের মধ্যে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় বাগড়া দিচ্ছে লোডশেডিং। বেঁচাকেনার সময়েও বিদ্যুৎ না থাকায় অলস সময় পার করছেন।
তাদের অভিযোগ দিনে-রাতে গড়ে কয়েক ঘণ্টা করে ৮-১০ বারও হচ্ছে লোডশেডিং। পিক আওয়ারে অতিরিক্ত লোডশেডিং হওয়ায় ক্রেতারাও আসছেন না। ফলে কমে গেছে কেনাবেচাও।
অপরিকল্পিত এমন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠমানুষ এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে নিজেদের মনের ভাব প্রকাশ করছেন। বিদ্যুৎ চলে গেলেই কেউ কেউ ব্যাঙ্গাত্মকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনুভূতি প্রকাশ করছেন।
নান্দাইল উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর এলাকার কড়ইকান্দি গ্ৰামের বাসিন্দা আজিজুল হক বলেন, বেশ গরমের মধ্যেও দিনে আট-দশবার বিদ্যুৎ চলে যায়, এজন্য মাঝে মাঝে বাসায় পানিরও সঙ্কট দেখা দিচ্ছে। একদিকে গরম, একই সঙ্গে মশার উপদ্রব, তার সাথে দেখা দিয়েছে পানির সঙ্কট। এইসব নিয়ে আমরা দিন পার করছি।
উপজেলার দক্ষিণ জাহাঙ্গীরপুর বাজারে ডাব কিনতে আসা ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সোহরাব উদ্দিন বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ৪ থেকে ৫ বার বিদ্যুৎ যায়। প্রতিবার ২ঘন্টা থেকে ৩ঘন্টা লোডশেডিং । রাতের অবস্থা আরো ভয়াবহ।
উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর এলাকার নাসিমা আক্তার বলেন, সারা দিনে কতবার বিদ্যুৎ যায়, তার হিসাব নেই। এক সপ্তাহ ধরে শুধু রাতেই চার-পাঁচ ঘণ্টা ধরে লোডশেডিং হচ্ছে। গরমের কারণে ঠিকমতো ঘুমাতে পারেন না। বাচ্চাটার ঠিকমতো পড়াশোনাও হচ্ছে না।