সোহেল রানা রাজশাহী
বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান।
নগরীর সড়ক বিভাজনে লাগানো হয়েছে সূর্যমুখী ফুল। ফলে দিনে ও রাতে সড়কগুলো নজর কাড়ছে নগরবাসীর। আর ফুলগুলো শুধু নজরই কাড়ছে না, অর্থ আয়েরও পথ খুলে দিচ্ছে।
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের তথ্যমতে, রাজশাহী নগরের সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য রাসিকের পরিবেশ উন্নয়ন শাখা শহরের মোট ৪টি সড়কে এসব ফুলের গাছ লাগিয়েছে। প্রাথমিকভাবে গত দুই বছর ধরে তারা একটি সড়ক বিভাজনে লাগিয়ে দেখে। এবার ৪টি সড়কের বিভাজনজুড়ে প্রায় ১০ হাজার সূর্যমুখী গাছ লাগানো হয়েছে।
রাজশাহীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, চারলেনের সবগুলো সড়ক বিভাজনেই লাগানো হয়েছে সূর্যমুখী ফুলগাছ। রাজশাহী মহানগরীর বিলশিমলা থেকে কাশিয়াডাঙ্গা পর্যন্ত চার দশমিক ২ কিলোমিটার সড়কের ওপর প্রজাপতির মতো ডানা মেলে আছে সড়কবাতি। আর তার নিচেই সড়ক বিভাজনে হাসছে সূর্যমুখী ফুল।
নগরীর তালাইমারি থেকে কোর্ট চত্বর পর্যন্তও রাজ মুকুট বাতির নিচে লাগানো হয়েছে সূর্যমুখী ফুল। এছাড়া আলিফ লাম মিম থেকে বিহাস পর্যন্ত সড়কেও লাগানো হয়েছে সূর্যমুখী ফুলগাছ।
অনেকেই বলছেন, এত সুন্দর সড়ক দেশের আর কোনো শহরে আছে কি না জানা নেই। এ রকম সড়কবাতি আসলেই কোথাও দেখা যায়নি। এখন রাস্তার বিভাজনে ফুল ফোটার কারণে সৌন্দর্য আরও বেড়েছে। সড়কবাতিগুলো দেখে মনে হচ্ছে যেন ডিভাইডারের ফুল থেকে উঠে কেবল উড়েছে।
রাজশাহী নগরীর সাহেব বাজার এলাকার বাসিন্দা মজিদ আলী বলেন, আগে সড়কে অন্য ফুল লাগাতো। তখন এতটা ভালো লাগতো না। এখন সূর্যমুখী লাগানো হয়েছে। সেগুলো দেখে ভালো লাগছে। আমরাও বিকেলে এখন এই পথ দিয়ে হাঁটি। তখন ফুলের সৌন্দর্য আমাদের মুগ্ধ করে।
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের পরিবেশ উন্নয়ন কর্মকর্তা সৈয়দ মাহমুদ উল ইসলাম বলেন, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন গত দুই বছর ধরে সূর্যমুখী চাষ করছে। প্রথম বছর আমরা বেশ ভালো সাড়া পাই। এরপর সেই ফুল থেকে যে বীজ পাই সেটি দিয়ে আবার চাষ শুরু করেছি। এবার আমরা ১০ হাজার সূর্যমুখীর চারা লাগিয়েছি।
তিনি বলেন, এসব সূর্যমুখী গাছ থেকে সৌন্দর্যের পাশাপাশি অর্থও আসবে। গতবছর আমরা একটি সড়কে সরিষা করেছিলাম। সেখান থেকে দেড় মণ সরিষা পেয়েছিলাম। এবার যে সূর্যমুখী হবে সেখান থেকেও বেশ ভালো তেলবীজ পাবো।
সৈয়দ মাহমুদ উল ইসলাম বলেন, তেলের দাম অনেক সময় বেড়ে যায়। আমরা এখান থেকে মানুষকে উৎসাহ দিতে এই উদ্যোগ নিয়েছি। আইল্যান্ডের জমি তেমন উর্বর নয়। তবুও সেখানে সূর্যমুখী যেভাবে হচ্ছে তাহলে বাড়িতে বা পতিত জমিতে কেমন ভালো হবে? মানুষ এগুলো যদি নিজেদের বাড়িতে চাষ করতে শুরু করে তাহলে আমরা তেলবীজ বেশি উৎপাদন করতে পারবো।
তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি। আমরা চাই আরও কিছু আছে যেমন জলপাই তেল ইত্যাদি ধরনের স্বাস্থ্যকর তেল আমরা ভবিষ্যতে উৎপাদন করবো।
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন এখন পর্যন্ত রাস্তার ধারে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য মোট ৩৪ হাজার গাছ লাগিয়েছে। এ বছরের জুন মাস পর্যন্ত ৫০ হাজার গাছ লাগাবে। আর গত চার বছরে রাজশাহী নগরীতে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য বিভিন্ন জাতের ১ লাখ ৬৭ হাজার গাছ লাগানো হয়েছে