মোস্তফা শাওন
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জের হাওর অঞ্চলে ভুট্টা আবাদ করে সফলতা পেয়েছে অনেক কৃষকেরাই।
কিশোরগঞ্জ থেকে মোস্তফা শাওন এর তথ্য ও ছবি নিয়ে রিপোর্ট।
বিকল্প ফসল হিসেবে এখন ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন কৃষক। উৎপাদন খরচ কম, দাম ভালো এবং চাহিদা বেশি থাকায় ভুট্টা চাষে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে তাদের।
গত কয়েক বছর ধরে লোকসানের কারণে কিশোরগঞ্জের হাওর অঞ্চলে ধান চাষে থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন কৃষকরা। ধান চাষ কমলেও বেড়েছে ভুট্টা ও সবজির চাষ। তাছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও আগাম বন্যায় হাওরাঞ্চলে ধান চাষে ঝুঁকিও রয়েছে। সেক্ষেত্রে ভুট্টা চাষে ঝুঁকি কম। কারণ বর্ষা আসার আগেই কৃষক ভুট্টা ঘরে তুলতে পারেন। ফলে বিকল্প ফসল হিসেবে দিন দিন বাড়েই ভুট্টার আবাদ।
ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
ইটনা উপজেলার ডাকি ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও কৃষক মোহাম্মদ তফসির মিয়া জানান প্রায় ছয় বছর যাবত এই ভুট্টা চাষ করে যাচ্ছেন । ধান চাষ করলে শিলাবৃষ্টি বন্যা প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয় থেকে যাই। ভুট্টা চাষের ক্ষেত্রে ঝুঁকি একদমই কম সে ভুট্টা চাষের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
যেসব জমিতে গত কয়েক বছর আগেও ধান আবাদ হতো সেই সব স্থানে মাঠের পর মাঠ দেখা যাচ্ছে ভুট্টার ক্ষেত।
একই গ্রামের কৃষক মোঃ হেলাল মিয়া জানান যে জমিতে আমার বাপ দাদারা ধান চাষ করতেন এই জমিগুলোতে এখন আমরা ভুট্টা চাষ করি কয়েক বছর ধরে। তিনি বলেন তিন একর জমিতে ভুট্টা চাষ করে ধান চাষের চেয়ে বুট্টা চাষে লাভবান হয়েছেন।
কাঠ কাল গ্রামের কৃষক মনোয়ার হোসেন রনি বলেন, এবার ছয়একর জমির ভুট্টা করেছি। ধান চাষ করে সবসময় চিন্তার মধ্যে থাকি এই বুঝি পাহাড়ি ঢলে বাঁধ ভেঙে সব তলিয়ে যাবে। তবে ভুট্টাটা আমাদের জন্য নিরাপদ একটা ফসল। আমার মতো অনেকেই এবার ধান বাদ দিয়ে ভুট্টা করেছে। গত বছর যে কয়েকজন ভুট্টা করেছিল তারা ধান চাষিদের তুলনায় অনেক লাভবান হয়েছেন।’
ভুট্টা আবাদে তেমন কোনও খরচ হয় না। ফলনও এ অঞ্চলে ভালো পাওয়া যায়। চাহিদাও আছে বাজারে।
কিশোরগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো: আব্দুস সাত্তার বলেন, এবছর কিশোরগঞ্জ জেলায় ভুট্টার আবাদ হয়েছে ১০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। এবছর আমরা ৫ হাজার ৪০০জন কৃষককে ১বিঘা জমির জন্য বিনামূল্যে ভুট্টার বীজ ও সার সংগ্রহন করে দিয়েছি। ভুট্টা চাষে লাভ বেশি, খরচ কম। তা ছাড়া, জমি পড়ে থাকার চেয়ে আমরা কৃষকদের ভুট্টা চাষে আগ্রহী করছি। এতে তারাও অনেক বেশি লাভের মুখ দেখছেন।
সট: কৃষিবিদ মো: আব্দুস সাত্তার, উপপরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি, কিশোরগঞ্জ