সোহেল রানা রাজশাহী বিভাগীয় ব্যুরো
রাজশাহীতে তালিকাভুক্ত হচ্ছে তূতীয় লিঙ্গের সদস্যরা
সমাজের সাধারণ মানুষকে নানান অজুহাতে হয়রানি বন্ধে এবং হিজড়া জনগোষ্ঠিকে সমাজের মূল স্রোতধারায় নিয়ে আসতে তালিকা প্রণয়নের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। অন্ততঃ রাজশাহীতে যত দ্রুত সম্ভব সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে তাদেরকে তালিকাভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আর জীবনমান উন্নয়নের এই কাজে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠিকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেছে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির স্বাভাবিক ও তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে পুলিশ বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময়কালে আজ হিজড়া জনগোষ্ঠীর সদস্যদের তালিকা প্রণয়নের এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আরএমপি সদর দপ্তরের সভাকক্ষে এই মত বিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টায় অনুষ্ঠিত এই সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. আনিসুর রহমান। সভায় দিনের আলো হিজড়া সংঘের সভাপতি মোহনা মঈনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও বিশিষ্ট সমাজসেবী শাহীন আক্তার রেনী, দিনের আলো হিজড়া সংঘের উপদেষ্টা ও দৈনিক সোনার দেশ পত্রিকার সম্পাদক আকবারুল হাসান মিল্লাত, দিনের আলো হিজড়া সংঘের উপদেষ্টা সেকেন্দার আলী, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান পরিষদ রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ও দিনের আলো হিজড়া সংঘের উপদেষ্টা শ্যামল কুৃমার ঘোষ, দিনের আলো হিজড়া সংঘের উপদেষ্টা শরীফ সুমন।
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আনিসুর রহমান বলেন, তৃতীয় লিঙ্গের জনগণের স্বীকৃতি বর্তমান সরকার প্রদান করেছে। এজন্য সরকার তাদের উন্নয়নেও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আর সরকারের এজেন্ডা বাস্তাবয়ন করে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের মাধ্যমে। তিনি বলেন, এই জনগোষ্ঠির উন্নয়নে প্রথমে সঠিক গণনা করা দরকার। সঠিক হিসাব থাকলে তাদের চাকুরিসহ নানা কাজে অন্তর্ভক্ত করা সম্ভব। তাই সবার আগে তাদের তালিকা প্রণয়ন করতে হবে।
পুলিশ কমিশনার আনিসুর রহমান আরও বলেন, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। এজন্য তৃতীয় লিঙ্গের জনগণের যেন মানবাধিকার লঙ্ঘিত না হয়, সে দিকে তিনি ও তার বাহিনী বিশেষ নজর রাখবেন। সেইসাথে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজী ও অশ্লিলতা থেকে বিরত থাকার জন্য তৃতীয় লিঙ্গের জনগণকে আহ্বান জানান পুলিশ কমিশনার।
তিনি আরো বলেন, এই জনগোষ্ঠিকে মূলধারায় সম্পৃক্ত করতে হলে গুরু প্রথা বাতিল ও অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। সন্তান যাই হোক নিজের কাছে রেখে মানুষ করে গড়ে তুলতে হবে। তৃতীয় লিঙ্গের জনগণের উন্নায়নে পুলিশ বিভাগের অফিসাররা কাজ করছেন। তার দপ্তর থেকেও নিয়মানুযায়ী সকল প্রকার সুবিধা প্রদান করা হবে বলে উল্লেখ করেন পুলিশ কমিশনার।
সভায় উপস্থিত ছিলেন, আরএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) বিজয় বসাক, উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর) মো. সাইফউদ্দীন শাহীন, উপ-পুলিশ কমিশনার (সিটিএসবি) মুহম্মদ আব্দুর রকিব।
এছাড়া আরএমপি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ১২টি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ দিনের আলো হিজড়া সংঘের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ সাগরিকা, অর্থ সম্পাদক জুলি এবং দিনের আলো হিজড়া সংঘের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন