বেলাবো ( নরসিংদী) প্রতিনিধি:- নরসিংদীর বেলাবো উপজেলার ধুকুন্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠন নিয়ে লুকোচুরিতে মেতেছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মনিরুজ্জামান মনির। তার ছলচাতুরিতে ২০২১ সালের ২১ নভেম্বর থেকে অদ্যবধি নিয়মিত কমিটি গঠন করতে ব্যর্থ হন তিনি। সরে জমিনে জানা যায় নিয়মিত কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ২১-১১-২১ ইং তারিখে একটি এডহক কমিটি গঠনের লক্ষ্যে সর্বসম্মতিক্রমে তিনজনের নাম তালিকাভুক্ত করে প্রধান শিক্ষক মোঃ মনিরুজ্জামান মনির বিদ্যালয়ের প্যাডে সীল স্বাক্ষর দেন। মনোনীত ব্যক্তিরা হল জহিরুল ইসলাম, স্বপন মাহমুদ এবং মোঃ আফসার উদ্দিন । কিন্তু এলাকাবাসী এবং অভিভাবককে ফাঁকি দিয়ে উক্ত প্রধান শিক্ষক তার পছন্দের ব্যক্তি অলি মাহমুদ কে এডহক কমিটির সভাপতি বানিয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড থেকে গোপনে কাগজ নিয়ে আসে। এ ব্যাপারে জহিরুল ইসলাম কে এড হক কমিটির সভাপতি করার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী অ্যাডভোকেট নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন সুপারিশ করলেও প্রধান শিক্ষক তা না করে ওলী মাহমুদকে এড হক কমিটির সভাপতি করেন। পরবর্তীতে নিয়মিত কমিটি গঠনের লক্ষ্যে মনোনয়নপত্র চেয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলে ১১জন অভিভাবক সদস্য মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে। এদিকে এলাকাবাসী ও অভিভাবকদের চাহিদা মোতাবেক ধুকুন্দী উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি , নরসিংদী আইনজীবী সমিতির তিনবারের সাবেক সভাপতি ও নরসিংদী জেলা আওয়ামীলিগের সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট আমজাদ হোসেনকে সভাপতি করার আশ্বাসে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন পাঁচজন। কিন্তু সিদ্দিকুর রহমান নামের একজন অভিভাবক সদস্য তাদের গোপন পায়তারা বুঝতে পেরে মনোনয়ন ফরম প্রত্যাহার করেনি এবং পাঁচ জন সদস্য থাকায় নির্বাচন প্রক্রিয়া চলতে থাকে। এদিকে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা ৫৯ নং ভোটার আলম মিয়া ভূয়া ভোটার বিবেচিত হওয়ায় অভিভাবক সদস্য প্রার্থী সিদ্দিকুর রহমান নরসিংদী দেওয়ানী আদালতে মামলা দায়ের করেন মামলা নং- ২৭৮/২২। বিজ্ঞ আদালত কমিটি গঠন স্থগিত করে পুনরায় এডহক কমিটি গঠন করে এবং ভোটার তালিকা সংশোধন করে নির্বাচন করার আদেশ দেন। এদিকে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনে শিক্ষকদের চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় গরমিল পরিলক্ষিত হয়। একটি তালিকায় ১৫ জন অন্য আরেকটি তালিকায় ১৩ জনকে অন্তর্ভুক্ত করে শিক্ষকদের ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। যাহার পরিপ্রেক্ষিতে সহকারী শিক্ষক মোঃ লোকমান হোসেন বাদী হয়ে নরসিংদী দেওয়ানি আদালতে মামলা দায়ের করেন মামলা নং২৭৭/২২। এদিকে স্থানীয় সাংসদ ও শিল্পমন্ত্রী অ্যাডভোকেট নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন পুনরায় অ্যাডভোকেট আমজাদ হোসেনকে এড হক কমিটির সভাপতি করার জন্য ঢাকা শিক্ষা বোর্ড বরাবর ডিউ লেটার প্রদান করেন। কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তা উপেক্ষা করে তার পছন্দের প্রার্থী অলি মাহমুদকে পুনরায় এডহক কমিটির সভাপতি করে বোর্ড থেকে অনুমোদন নিয়ে আসে। এব্যাপারে আমলাব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নুরুল হাসান জানান প্রধান শিক্ষক মোঃ মনিরুজ্জামান মনির কোন ব্যাপারে কারো সাথে যোগাযোগ করেনি। বর্তমান এড হক কমিটি গঠন করার পূর্বে এলাকাবাসীর পরামর্শ ক্রমে এবং আমাকে জানিয়ে সভাপতি নির্বাচন করে তালিকা প্রেরণের কথা বললেও তিনি তা করেনি ।এমনকি সভাপতির নাম পাঠানোর পূর্বে আমার সাথে যোগাযোগ করার কথা থাকলেও তিনি তা না করে তার পছন্দের ব্যক্তিকে বর্তমান এড হক কমিটির সভাপতি নির্বাচিত করেন। এদিকে প্রধান শিক্ষকের এ ধরনের কর্মকাণ্ডের জন্য বেলাবো উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে শিক্ষা বোর্ড থেকে এ বিষয়টি তদন্তের জন্য একটি অনুলিপি প্রেরণ করেন। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আয়শা জান্নাত তাহেরার দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি জানান সবেমাত্র আমি যোগদান করেছি । বোর্ড থেকে যে চিঠির মাধ্যমে আমাকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সে ব্যাপারে আমি এখনো অবগত নই। যদি এধরনের চিঠি এসে থাকে তবে আমি সম্পূর্ণ আইনানুগ পন্থার ভিতরে থেকে তদন্ত করে রিপোর্ট পেশ করব। অন্যদিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান মনির এর কাছে বিষয়টির ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি কোন কিছু বলতে নারাজ এমনকি সাংবাদিকদের সাথেও বিন্দুমাত্র সৌজন্যমূলক আচরণ করেননি। তাই অভিভাবক ও এলাকাবাসী কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি সুস্থ তদন্তের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।