রংপুরের পীরগাছায় ইটাকুমারী ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারি কর্মকর্তা মুকুল হোসেন বিরুদ্ধে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে নানা অনিয়ম-দুনীতির অভিযোগ উঠছে।
তিনি ভূমি মালিকদের নিকট থেকে খাজনা খারিজের নামে হাতিয়ে নিয়েছেন লক্ষাধিক টাকা।এমনকি সরকারি গাছ কেটে নিজের বাড়িতে নিয়ে গেলে তার বিরুদ্ধে নেয়া হয়নি কোন ব্যবস্থা।
ফলে তিনি দিনের পর দিন অনিয়ম-দুনীতি করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন তিনি।
সরেজমিনে ইটাকুমারী ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গেলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন সাধারন মানুষ।কথা হয় স্কুল শিক্ষক আবেদ আলীর সাথে।
তার বাড়ি পীরগাছা উপজেলার ইটাকুমারী ইউনিয়নের পূর্বপাড়া গ্রামে।জমির খাজনা পরিশোধ করার জন্য তিনি এসেছেন ইউনিয়ন ভূমি অফিসে।
সেখানে তিনি খাজনা বাবদ মোট ৮হাজার টাকা জমা দেন।
কিন্তু তাঁর বিপরীতে তাঁকে ধরিয়ে দেওয়া হয় ২হাজার টাকার রশিদ।
সেই রশিদে উক্ত ভূমি অফিসের ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মুকুল হোসেনের সিল ও সই রয়েছে।শুধু আবেদ আলী নয়,তার মতো শত শত ভূমি মালিকের এই অবস্থা।
ভুক্তভোগী ভূমি মালিকদের অভিযোগ,উপ-সহকারী কর্মকর্তা মুকুল হোসেনের যোগসাজশে দূর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে ইটাকুমারী ইউনিয়ন ভূমি অফিস।
ওই অফিসের পিয়ন মুক্তা বেগমের মাধ্যমে দালাল ঠিক করে এসব অপকর্ম করে আসছেন দীর্ঘদিন থেকে।
ওই ইউনিয়নের আরাজী ঝিনিয়া গ্রামের ছপুর উদ্দিনের হয়ে খাজনা দেন রেজাউল মিয়া।তাঁর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,
উপ-সহকারী কর্মকর্তাকে খাজনার জন্য ৭হাজার টাকা জমা দিলে পিয়ন মুক্তা বেগম তাঁকে ৩হাজার টাকার রশিদ দেন।
[caption id="attachment_1921" align="alignleft" width="300"] পীরগাছায় ক্ষমতাধর ভূমি কর্মকর্তা।[/caption]
এছাড়া ইটাকুমারীর আবুল হোসেনকে ২হাজার ৫০০টাকার বিনিময়ে ধরিয়ে দেওয়া হয় মাত্র ২০টাকার রশিদ।
পরদিকে মধুরাম গ্রামের জাহিদুল ইসলামকে ৫হাজার টাকার বিপরীতে ১৫০০ টাকার রশিদ দেন ওই কর্মকর্তা।
এ রকম দুনীতির স্বর্গরাজ্যে বাস করছেন ইটাকুমারী ইউনিয়নবাসী।কিন্তু মুখ খুলে কেউ কথা বলার সাহস পাননি।
ওই ইউনিয়নের বাসিন্দা আকতারুজ্জামান,সুধীর চন্দ্রসহ স্থানীয় অনেকেই বলেন,ওই কর্মকর্তা মুকুল হোসেন আমাদেরকে নানাভাবে হয়রানি করে আসছে।
টাকা ছাড়া তাঁরা কোন কাজই করতে চায় না।সিএস,আরএস ও এসএ খতিয়ান এনে দেওয়ার কথা বলে নেওয়া হচ্ছে ২০০০-৩০০০টাকা। যার সরকার নির্ধারিত ফি মাত্র ৫০টাকা।
ইউনিয়নের মানুষজনকে বিভ্রান্তিমূলক কথা বলে,চাপ প্রয়োগ করে এই টাকা আদায় করছেন মুকুল হোসেন।
শুধু খাজনা খারিজেই মুকুল হোসেনের দূর্নীতি সীমাবদ্ধ থাকেনি।তাঁর বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তি ভোগদখল ও বিক্রির অভিযোগও রয়েছে।
তহশিল অফিসের কাজ করার কথা বলে অনেক পুরাতন একটি কড়ই গাছ কেটে গত ১৭মার্চ নিজের বাসায় নিয়ে যান তিনি।
গাছটির বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ২৫হাজার টাকা।
গাছ পরিবহণের জন্য যে অটো রিক্সা ভাড়া করা হয়েছিল সেই চালক আল আমিনের সঙ্গে কথা হয়েছে এই প্রতিবেদকের।
তিনি বলেন,৫থেকে ৬সেপ্টি কাঠ মিল থেকে আমি ওনার বাসায় দিয়ে আসি।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত কর্মকর্তা মুকুল হোসেনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,আমি আমার ক্ষমতায় গাছ কেটেছি।
দুনীতি ও অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,কার কাছে কত টাকা নিয়েছি।সেটা আপনাদের জানার দরকার নাই।
পারলে আমার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ করুন।
এ ব্যাপারে পীরগাছা উপজেলা সহকারি কমিশনার(ভূমি)মুসা নাসের চৌধুরী বলেন,ওনার নামে অনেক অভিযোগ।অলরেডি তাকে বদলী করা হয়েছে।
দুই-এক দিনের মধ্যে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে।আর কিছুদিন আগে এসব অভিযোগ পেলে ভালো হতো।
সম্পাদক ও প্রকাশক- খায়রুল ইসলাম, বার্তা সম্পাদক - সোহেল রানা
সম্পাদকীয় কার্যালয়- ৫২২ আইনুল্লাহ স্কুল রোড, স্বল্পমারিয়া, বএিশ, কিশোরগঞ্জ।
০১৯১২৫৫০৭২৭,০১৭২৪৫৭৪২১৭
Copyright © 2024 কালের নতুন সংবাদ. All rights reserved.