সোমবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২৯ অপরাহ্ন
টার্গেট ছিল ৩৩২ কোটি টাকা লুটপাটের।
-
প্রকাশ কাল
বৃহস্পতিবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২১
-
৪১৭
বার পড়েছে
অনলাইনডেস্ক:নিউজপোর্টালতোকদারনিউজ.কম,এরনিউজইডিটরও প্রতিষ্ঠাতা:মোঃমোশারফ হোসেন তোকদার লিমন,রংপুর বিভাগঃ-
টার্গেট ছিল ৩৩২ কোটি টাকা লুটপাটের।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঢাকা শহর সন্নিকটবর্তী এলাকায় ১০টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্পে’র ভূমি অধিগ্রহণ ব্যয় মূল উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে(ডিপিপি)৪০০কোটি টাকা ছিল। সংশোধিত মূল উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব(আরডিপিপি)প্রস্তুতকালে ব্যয় বৃদ্ধি করে দেখানো হয় ৭৩২কোটি ৪১লাখ ১৮হাজার ৩৪৭টাকা।অর্থাৎ প্রকল্পের ব্যয় বেশি দেখানো হয় ৩৩২কোটি টাকা। আর এ লুটপাটের পরিকল্পনা করেছিলেন প্রকল্পের সাবেক পরিচালক(পিডি)ডঃআমিরুল ইসলাম ও সদস্যসচিব দিল আফরোজ বিনতে আছিরসহ একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট।এর মাস্টারমাইন্ড ছিলেন প্রকল্প পরিচালক ও সদস্যসচিব।বিষয়টি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ ও একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তেও প্রমাণিত হয়েছে।এর পরই প্রকল্পের পিডি ডঃআমিরুল ইসলামকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওএসডি)করে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।জানা গেছে,তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার প্রস্তুতি চলছে।কিন্তু প্রকল্পের সদস্যসচিব মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের পরিকল্পনা উইংয়ের সহকারী পরিচালক(পরিকল্পনা ও উন্নয়ন)দিল আফরোজ বিনতে আছির রয়েছেন বহাল তবিয়তে।২৪ বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের এ কর্মকর্তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সিন্ডিকেটের যোগসাজশে দীর্ঘ ১৫বছর যাবৎ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরে কর্মরত।গত বছরের ৩০সেপ্টেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে শিক্ষামন্ত্রী অনুমোদন দিলেও আজ পর্যন্ত দৃষ্টান্তমূলক কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।বরং ওই সিন্ডিকেটের চাপে মন্ত্রণালয় থেকে দুর্বল ও দায়সারা বিভাগীয় অভিযোগনামা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।তাদের মতে অভিযোগনামায় পুরো বর্ণনা দুর্নীতির হলেও দুর্নীতির ধারা শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা,২০১৮-এর বিধি ৩-এর(ই)বাদ দিয়ে শুধু অসদাচরণের ধারা ৩-এর(খ)দিয়ে অভিযোগ আনা হয়েছে।এমনকি একজন অতিরিক্ত সচিবের তদন্তের পর বিভাগীয় তদন্ত করতে একজন উপসচিবকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।৪অক্টোবর মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে বলা হয়-মাউশির সহকারী পরিচালক(পরিকল্পনা ও উন্নয়ন)দিল আফরোজ বিনতে আছিরের বিরুদ্ধে প্রকল্পের মূল ডিপিপি থেকে আরডিপিপি প্রস্তুতকালে সম্পূর্ণ দুরভিসন্ধিমূলকভাবে ও দুর্নীতির অভিপ্রায়ে ভূমি অধিগ্রহণ ব্যয় বাবদ খরচ ৪০০কোটি থেকে ৭৩২ কোটি ৪১লাখ ১৮হাজার ৩৪৭টাকায় বৃদ্ধি করার অভিযোগ ওঠে।এর মধ্যে ঢাকা শহরের নিকটবর্তী ছয়টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন এলাকায় বাস্তবে বড় কোনো গাছপালা ও অবকাঠামো না থাকা সত্ত্বেও গাছপালা অবকাঠামো(যদি থাকে)উল্লেখ করে ১০১কোটি টাকার ওপরে ব্যয় দেখানো হয়।এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জে একটি প্রকল্পে নাল জমিকে ভিটি শ্রেণি দেখিয়ে ২৪ কোটি ৪৭লাখ টাকা অতিরিক্ত বৃদ্ধি করার অভিযোগ রয়েছে।
তিনি প্রকল্পের সদস্যসচিব ও মাউশির সহকারী পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন)হিসেবে ভূমি অধিগ্রহণের মূল্য তালিকা যাচাই-বাছাই করে সম্পূর্ণ দুরভিসন্ধিমূলকভাবে ও দুর্নীতির অভিপ্রায়ে মিথ্যা তথ্য সন্নিবেশনের আরডিপিপি প্রস্তুত করে প্রতি পৃষ্ঠায় সই করে অনুমোদনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছেন।ওই অভিযোগসমূহ মন্ত্রণালয় কর্তৃক তদন্তে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় সরকারি কর্মচারী(শৃঙ্খলা ও আপিল)বিধিমালা,২০১৮-এর বিধি ৩(খ)অনুযায়ী অসদাচরণ-এর অভিযোগে অভিযুক্ত করে তাকে কারণ দর্শানোর চিঠি দেওয়া হয়।তিনি নোটিসের জবাব দেওয়ার পর ব্যক্তিগত শুনানি প্রার্থনা করেন।ব্যক্তিগত শুনানিকালে সন্তোষজনক জবাব উপস্থাপন করতে না পারায় ওই রুজ্জুকৃত বিভাগীয় মামলাটি তদন্ত করার জন্য সরকারি কর্মচারী(শৃঙ্খলা ও আপিল)বিধিমালা, ২০১৮-এর বিধি ৭-এর(২)(ঘ)অনুযায়ী একজন উপসচিবকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয় চিঠিতে।একই ধারায় অভিযুক্ত করে সাবেক পিডি ডঃ আমিরুল ইসলামকেও ২৯ আগস্ট চিঠি দেয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।তিনি আত্মপক্ষ সমর্থনে কোনো ব্যক্তিগত শুনানি চান কি না তার জবাব দিতে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন,তিনি ব্যক্তিগত শুনানি চাইলে এবং শুনানিকালে সন্তোষজনক জবাব দিতে ব্যর্থ হলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করবে মন্ত্রণালয়।এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মোঃমাহবুব হোসেন গতকাল নিজ দফতরে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন,ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।এ ঘটনায় দায়ীদের চিহ্নিত করা হয়েছে।নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেককে আলাদাভাবে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগও দেওয়া হচ্ছে।কেউ সন্তোষজনক জবাব উপস্থাপন করতে না পারলে বিভাগীয় মামলা করে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হচ্ছে। তদন্তে তাদের দায়ের পরিমাণ নির্ধারণ করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।এ পর্যন্ত তিনজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে।বিভাগীয় তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে সদস্যসচিবের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।এর আগেএঅভিযোগ তদন্তে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত(মাধ্যমিক)সচিব মোঃমোমিনুর রশিদ আমিনকে সভাপতি করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।ওই তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়-সার্বিক দিক বিবেচনায় ঢাকা সন্নিকটবর্তী ১০টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্পে ব্যক্তিমালিকানাধীন জমির ছয়টি প্রকল্পের মধ্যে শুধু গাছপালা ও অবকাঠামো“যদি থাকে”উল্লেখ করে কম করে হলেও প্রায় ১০১কোটি টাকার ওপরে অতিরিক্ত প্রাক্কলন করা হয়েছে এবং নারায়ণগঞ্জের একটি প্রকল্পে নালা শ্রেণিকে ভিটি শ্রেণি দেখিয়ে প্রায় ২৪কোটি ৪৭লাখ টাকা বেশি ধরা হয়েছে।যা নৈতিকতাবিবর্জিত।এর জন্য পিডি দায় এড়াতে পারেন না।একই প্রতিবেদনে দিল আফরোজ বিনতে আছিরকে দায়ী করে বলা হয়-তিনি প্রকল্পের সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব প্রাপ্ত ছিলেন ও সম্ভাব্য মূল্য তালিকার প্রতি পৃষ্ঠায় স্বাক্ষর করেছেন।সদস্যসচিব ও সহকারী পরিচালক(পরিকল্পনা ও উন্নয়ন)হিসেবে তারও প্রকল্পের সাইট পরিদর্শন করার কথা।প্রস্তুতকৃত মূল্য তালিকা তিনি না দেখে করেছেন তা ভাবার কোনো অবকাশ নেই।ভূমি অধিগ্রহণের মূল্য তালিকা মাত্র ছয় পৃষ্ঠার এবং প্রকল্পের সিংহভাগ অর্থ এ খাতেই ব্যয় হচ্ছে।এ ক্ষেত্রে তিনিও দায় এড়াতে পারেন না।এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রকল্পের সাবেক পিডি ড. আমিরুল ইসলাম কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।তবে দিল আফরোজ বিনতে আছির নিজের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে বলেন, আরডিপিপি আমি প্রস্তুত করিনি,এটা আমার দায়িত্ব নয়।আমি প্রকল্পের সদস্যসচিবও নই।জমি অধিগ্রহণ করেছেন ডিসি অফিসের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা।
বিডি//নিজস্বপ্রতিবেদকনিউজপোর্টালতোকদারনিউজ.কমএর প্রকাশিত,প্রচারিত,কোনো,সংবাদ,তথ্য,ছবি,আলোকচিত্র,রেখাচিত্র,ভিডিওচিত্র,অডিও কনটেন্টও পোস্ট যদি আপনাদের পছন্দ হয়ে থাকে তাহলে এই লিংকটি আপনার গুরুপে শেয়ার করুন ওপেজে লাইক দিন।
বিডি//নিজস্বপ্রতিবেদকনিউজপোর্টালতোকদারনিউজ.কমএর প্রকাশিত,প্রচারিত,কোনো,সংবাদ,তথ্য,ছবি,আলোকচিত্র,রেখাচিত্র,ভিডিওচিত্র,অডিও কনটেন্ট কপিরাইটআইনেপূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবেনা।
শেয়ার করুন
অন্যান্য সংবাদসমূহ
প্রযুক্তি সহায়তায় BTMAXHOST