অনলাইন ডেস্ক মোঃ লিমন তোকদার,নিউজ ইডিটর দৈনিক তোকদার নিউজ.কমএর।
তালেবানরা দাবি করছে যে তারা ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে এবং দেশটি যুদ্ধের দুঃস্বপ্ন’রক্ষা পেয়েছে।কিন্তু সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইরাক ও সিরিয়া ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আইএসআইএল (আইএসআইএস)এর আফগান শাখা ধারাবাহিকভাবে হামলা করে তালেবানের সেই দাবি ভেঙে দিয়েছে।
তালেবানরা ক্ষমতায় আসার ছয় সপ্তাহের মধ্যেই ইসলামিক স্টেট ইন খোরাসান প্রভিন্স-আইএসকেপি(আইএস-কে)কাবুল,জালালাবাদ এবং মাজার-ই-শরীফ শহরে হামলা করেছে।তালেবানদের ক্ষমতা দখলের মাত্র ১১ দিন পরে গত ২৬ আগস্ট সন্ধ্যায় আইএসকেপি কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক ভয়াবহ আত্মঘাতি বোমা হামলা চালায়।যার ফলে ১৮০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয় এবং শত শত আহত হয়।নানগারহার প্রদেশের রাজধানী জালালাবাদ শহরে বেশ কয়েকটি হামলার খবর পাওয়া গেছে।আইইডি বিস্ফোরণ সহ সাম্প্রতিক এসব হামলায় বেসামরিক মানুষ এবং তালেবান যোদ্ধাদের হত্যা করা হয়েছে।
এক টেলিগ্রাম বার্তায় আইএসকেপি জালালাবাদে ৩৫ জন তালেবান যোদ্ধাকে হত্যার দাবি করেছে।তবে তালেবান হতাহতের এই সংখ্যা অস্বীকার করেছে।প্রতিটি হামলার ঘটনার পরই তালেবানরা কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে এবং আইএস-এর প্রতি অনুগত যেকোন শক্তিকে নির্মূল করার অঙ্গীকার অব্যাহত রেখেছে।
তথ্য ও সংস্কৃতি উপমন্ত্রী জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ আল জাজিরাকে বলেন,যারা বিশৃঙ্খলা বীজ বপন করছে তালেবানরা তাদের খুঁজে বের করবে।কাবুল বিমানবন্দরে হামলা ঠেকাতে ব্যর্থতার জন্য তালেবানরা যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করে বলেছে,এটি এমন একটি এলাকায় ঘটেছে যেখানে মার্কিন বাহিনীই নিরাপত্তার জন্য দায়ী ছিল,হামলার সময় মার্কিন বাহিনীর হাতেই সেখানকার নিয়ন্ত্রণ ছিল।কিন্তু কাবুল বিমান বন্দেরে হামলার কিছু সময় পরেই,নিহতদের পরিবার ও আত্মীয়স্বজনরা তালেবানদের প্রতিই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন।গত ২০বছরের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক এই আত্মঘাতি হামলা রোধে ব্যর্থতার জন্য তারা তালেবানকেই দায়ী করেন।ওই হামলায় নিহতদের একজনের আত্মীয়কে কাবুলের ইতালি পরিচালিত জরুরি হাসপাতালে তালেবান বাহিনীর দিকে চিৎকার করতে বলতে শোনা যায়,এই সব তোমাদের দোষ;তোমরা সবাই এটা করেছ।তোমরা কিছুই সুরক্ষিত করনি।তালেবানরা অতীতে আই এস এর কবল থেকে অনেক এলাকা উদ্ধার করেছে।কিন্তু দীর্ঘদিনের শত্রুকে পুরোপুরি নির্মূল করা তার চেয়ে কঠিন মনে হচ্ছে।সম্প্রতি তালেবান আইএসকেপি সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে এবং আইএসকেপির শক্ত ঘাঁটি নানগাহার প্রদেশ থেকে কমপক্ষে ৮০ জন আইএস যোদ্ধাকে আটক করেছে।কাবুলের কুখ্যাত পুল-ই-চরখি কারাগারে আইএসকেপির সাবেক নেতা আবু ওমর খোরাসানি নামে পরিচিত জিয়া উল হককেও তালেবানরা হত্যা করেছে বলে দাবি করেছে আইএস।
পাকিস্তানের আইএসআইএল নেতা ফারুক বেনগালজাইকেও তালেবানরা হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।দক্ষিণ-পশ্চিম আফগানিস্তানে ভ্রমণের সময় ফারুক বেনগালজাই নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।গত ২৮ আগস্ট রাজধানী কাবুলের সালাফি আলেম আবু ওবায়দুল্লাহ মুতাওয়াকিলকেও তালেবানরা গ্রেপ্তার করে।এর এক সপ্তাহ পর মুতাওয়াকিলকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।